আরাফাত রহমণ কোকো – ক্রিকেট সংগঠক থেকে স্মৃতিবিজড়িত নাম

tek news icon bd

TEK NEWS DESK

March 12, 2020

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিসরে এক কেন্দ্রীয় নাম হিসেবে পরিচিত আরাফাত রহমণ কোকো, যাঁর উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ও উদ্যোগ আজও স্মৃতিতে অমলিন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া-র কনিষ্ঠ পুত্র। তাঁর কর্মজীবন মূলত খেলাধুলা ও যুব উন্নয়নকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।

প্রারম্ভিক জীবন ও পরিবার

  • জন্ম: ১২ আগস্ট ১৯৬৯, কুমিল্লা (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান)
  • পিতা-মাতা: রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
  • দাম্পত্য ও সন্তান: স্ত্রী – সৈয়দা শামিলা রহমান; কন্যা – জাহিয়া ও জাফিয়া
Arafat-Rahman-Koko-BD
Arafat Rahman Koko

ক্রিকেটে অবদান ও প্রযুক্তি-চালিত উন্নয়ন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (BCB)-এ ভূমিকা (2002–2005)

  • Development Committee-এর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি হাই-পারফরম্যান্স স্কোয়াড চালু করেন, যা পরবর্তী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য পরিকল্পিত প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন নিশ্চিত করে
  • শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামবগুড়া শহীদ চন্দু স্টেডিয়াম নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন
  • অচল ক্রিকেট প্রশাসন-কে একদিকে প্রযুক্তিনির্ভর ও যুগোপযোগী পরিকল্পনার দিকে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, খেলাধূলাকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন

এই সময়ের সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে তিনি দেশের ক্রিকেটকে একটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে কাজ করেন।

Arafat-Rahman-Koko
Arafat Rahman Koko (1969-2015 = 46)

রাজনৈতিক অতিরিক্ত চাপ ও নির্বাসন

  • ২০০৭–২০০৮ খরচিং সরকারের সময় আরাফাত রহমণ কোকো মুদ্রা বা সম্পদ পাচারের অভিযোগে বিচারাধীন হন, যার ফলে তিনি নির্বাসনে চলে যান
  • বিএনপি নেতারা পরবর্তীতে দাবি করেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না এবং তাঁর দমনমূলক বিচার তাকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে

উল্লেখযোগ্য: স্বাধীন রাজনৈতিক জীবন, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন—এগুলোই তার ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য।

মৃত্যুবরণ এবং স্মৃতি

  • মৃত্যু: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে হার্ট অ্যাটাক করে তিনি মৃত্যুবরণ করেন
  • সমাধিস্থ: বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়, যেখানে বড় সংখ্যক মানুষ শোকসভার মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধা জানান
  • প্রতি বছর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপি ও সহযোগী সংস্থা বিশেষ দোয়া-মাহফিল এবং আলোচনা সভা আয়োজন করে স্মরণ করে

সারসংক্ষেপ টেবিল

ক্ষেত্রতথ্য ও অবদান
পরিবারবাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার
ক্রিকেট অবদানহাই-পারফরম্যান্স স্কোয়াড, নতুন স্টেডিয়াম, ক্রিকেট প্রশাসনীয় সংস্কার
রাজনৈতিক চাপনির্মম বিচার ও নির্বাসন
মৃত্যু ও স্মৃতি২০১৫ সালে হৃদরোগে মৃত্যুবরণ; প্রতিবার স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল
টেকনোলজি সংযোগক্রিকেট উন্নয়নে আধুনিক পরিকল্পনা ও অবকাঠামো উন্নয়নে নেতৃত্ব

আরাফাত রহমণ কোকো – সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নউত্তর
পুরো নামআরাফাত রহমণ কোকো
জন্ম তারিখ১২ আগস্ট ১৯৬৯
জন্মস্থানকুমিল্লা, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)
পিতাশহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান
মাতাসাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া
ভাইতারেক রহমান
স্ত্রীসৈয়দা শামিলা রহমান
সন্তানদুই কন্যা – জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান
শিক্ষাপ্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন ঢাকায় সম্পন্ন; উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য সর্বজনীনভাবে জানা যায়নি
পেশাগত ভূমিকাবাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (BCB) ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান (২০০২–২০০৫)
উল্লেখযোগ্য অবদানহাই-পারফরম্যান্স স্কোয়াড চালু, শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বগুড়া শহীদ চন্দু স্টেডিয়াম উন্নয়ন
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাসরাসরি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না
মৃত্যুর তারিখ২৪ জানুয়ারি ২০১৫
মৃত্যুর স্থানকুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া
মৃত্যুর কারণহার্ট অ্যাটাক
দাফনস্থানবনানী কবরস্থান, ঢাকা
বিশেষ উল্লেখক্রিকেট অবকাঠামো ও খেলোয়াড় উন্নয়নে তাঁর অবদান এখনো ক্রীড়া মহলে প্রশংসিত

আরাফাত রহমণ কোকো – অনুপ্রেরণামূলক উক্তি (Quotes)

“Arafat Rahman Koko was the main hero in the development of Bangladeshi cricket.”
— বিএনপি নেতা ফখরুলী (Fakhrul)

এই উক্তি তাঁর ক্রিকেট উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে—যেখানে তাঁর পেশাজীবী উদ্যোগ এবং ক্রিকেট প্রশাসনে যেসব সংস্কার ছিল, সেগুলোকে একটি সম্মানজনক ভাষায় আলোচনা করা হয়েছে।

“Behind this journey, often overlooked, was a man who set Bangladesh cricket on the path to serious development… His contributions may not always find their place in the official narratives, yet his impact is etched in the foundational structure of the sport in Bangladesh.”

এই মন্তব্যে কোকোর অবদানকে “ভিত্তি নির্মাতা” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি সেই ব্যাক্তি, যিনি দৃশ্যমান না হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটকে পেশাদার ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সারসংক্ষেপ

দিকমূল বক্তব্য
ক্রিকেট বিকাশের নায়কফখরুলী তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রতিষ্ঠাকে “নায়ক” স্তরে উন্নীত করেছেন বলেই মন্তব্য করেছেন।
গোপন অথচ প্রভাবশালী ভূমিকাযদিও তার নাম হয়তো আলোচনায় কম এসেছে, তার অবদান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকদের মধ্যে চিরস্থায়ী প্রভাব রেখে গেছে।

উপসংহার

আরাফাত রহমণ কোকো না শুধু একজন ক্রিকেট সংগঠক, বরং একজন সময়োপযোগী নেতা যিনি খেলার মধ্যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও পরিচালনাগত স্বচ্ছতা আনতে চেয়েছিলেন। তিনি রাজনীতির বাইরে থেকে ক্রীড়া সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন—এমন উদ্যোগ বাংলাদেশে বিরল।

তার জীবন থেকে আজকের টেক নিউজ পাঠকদের জন্য আমরা পেতে পারি:

  • নতুন প্রযুক্তি ও পরিকল্পনার গুরুত্ব—যেভাবে উন্নয়ন সূচনা করা হয়
  • খেলাধূলায় রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা
  • নেতৃত্বে দক্ষতা, মানবিকতা ও যান্ত্রিক অবকাঠামো—এসবের সংমিশ্রণ

ধন্যবাদ টেক নিউজের সাথে থাকার জন্য।

Leave a Comment