কক্সবাজারের স্বর্ণালি সমুদ্রসৈকত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। সম্প্রতি রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় ঢাকার যাত্রীরা এখন আগের তুলনায় দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছাতে পারছেন। এই ব্লগে আমরা বাংলা ট্রেন পরিষেবা, সময়ের গতি, ভাড়া, যাত্রাপথ এবং কিছু প্রশ্নোত্তর তুলে ধরছি।
রেললাইন ও ট্রেন পরিষেবা
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেললাইন
চট্টগ্রামের ডোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সদ্য চালু হওয়া এই রেললাইন মোট ১০২ কিমি দীর্ঘ একটি দ্বৈত গেজ রুটে নির্মিত। মূলত এটি ঢাকা থেকে সোজা রেল সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ঢাকা–কক্সবাজার রাত্রী ট্রেন: কক্সবাজার এক্সপ্রেস
‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করে।
- ঢাকা → কক্সবাজার: রাত ১১:০০ টা (কমলাপুর) ছাড়ে, পরবর্তী দিন সকাল ৭:২০ টায় কক্সবাজার পৌঁছে; যাত্রা সময় ~৮ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
- কক্সবাজার → ঢাকা: দুপুর ১২:৩০ টায় ছাড়ে, রাত ৯:০০ টায় ঢাকার কামালপুর স্টেশন পৌঁছায়; সময় প্রায় ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
- অফডে: ঢাকা থেকে প্রতি সোমবার এই ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
পর্যটক ট্রেন: পর্যটক এক্সপ্রেস (Parjatak Express)
‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ ১০ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে সেবা চালু করে। এটি ঢাকা, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সংযুক্ত করে।
- মোট দূরত্ব: ~৫৫১ কিমি
- যাত্রা সময়: প্রায় ৪৮০ মিনিট (৮ ঘণ্টা)।
- চলাচল: সপ্তাহে ৬ দিন (রোববার বন্ধ)।
ভাড়া ও টিকেট ক্লাস
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (Cox’s Bazar Express)
ক্লাস | মূল্য (টাকা) |
---|---|
Shuvon Chair | ৬৯৫ |
Snigdha (AC) | ১৩২৫ |
AC Berth | ২৩৮০ |
প্রস্তাবিত ভাড়া (প্রজেক্ট ভিত্তিক)
প্রাথমিক দৃশ্যে non-AC: ~৭০০ টাকা, AC: ~১,৫০০ টাকা।
ডাব্লুআর সার্ভিস (Rome2Rio তথ্য)
সর্বনিম্ন ভাড়া: USD $2 (~ঢাকা ২০০ টাকা) – সর্বাধিক: USD $21 (~ঢাকা ২,২০০ টাকা), নির্ভর করে ক্লাস ও সুবিধার ওপর।
যাত্রাপথ ও সময়ের বিশ্লেষণ
- কক্সবাজার এক্সপ্রেস: ঢাকা রাত ১১ → কক্সবাজার সকাল ৭:২০ (~৮ ঘণ্টা ২০ মিনিট)।
- পর্যটক এক্সপ্রেস: নির্ধারিত সময় ~৮ ঘণ্টা।
রেল যাত্রার সময়গতি পূর্ববর্তী বাস বা গাড়িচালিত যাতায়াতের তুলনায় অনেক দ্রুত। তবে নির্ভর করে স্টপেজ ও ট্রেন লাইনের অবস্থা অনুযায়ী।
কেন ট্রেনে যাওয়া ভালো?
- স্বস্তি ও নিরাপত্তা: রাতের ট্রেনে বিশ্রাম করা যায়, এটি অফসিজনে ভালো বিকল্প।
- দৃশ্যমান পথ: ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
- ভাড়া সাশ্রয়ী: শুধুমাত্র ৭০০–২৩৮০ টাকায় বিশিষ্ট ভাড়া পাওয়া যায়, যা বাস বা বিমানের চেয়ে কম।
- পর্যটন উন্নয়ন: ট্রেন চালু হলে কক্সবাজার আরও সহজ সংযুক্ত হয়, যা টুরিজমকে উপকৃত করে।
FAQs — প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
প্রশ্ন ১: ঢাকা থেকে কক্সবাজার কোন ট্রেনগুলো চলে?
উত্তর: প্রধানত ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ (দৈনিক, প্রতি সোমবার বন্ধ) এবং ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ (সপ্তাহে ৬ দিন) চলে।
প্রশ্ন ২: ট্রেন যাত্রাপথের সময় কত?
উত্তর: প্রায় ৮–৮.৫ ঘণ্টা (৮ ঘণ্টা ২০ মিনিট), নির্ভর করে ট্রেনে এবং স্টপে।
প্রশ্ন ৩: টিকেটের ভাড়া কত?
উত্তর: Shuvon – ৬৯৫ টাকা; Snigdha (AC) – ১৩২৫ টাকা; AC Berth – ২৩৮০ টাকা। প্রস্তাবিত – non-AC ৭০০ টাকা; AC ১৫০০ টাকা।
প্রশ্ন ৪: কোথা থেকে টিকেট নেওয়া যায়?
উত্তর: বাংলাদেশ রেলওয়েজের ই-টিকেট সেবা (eticket.railway.gov.bd) বা স্টেশন কাউন্টারে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৫: কেন ট্রেন ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর: সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, আরামদায়ক এবং ট্রিপ উপভোগের জন্য উত্তম। আরও দ্রুত ও নিরাপদ পরিবহণ ব্যবস্থা।
উপসংহার
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যাত্রা — শিথিল ঝাঁপ, সময়-বান্ধব ভ্রমণ ও নির্ভরযোগ্য পরিবহন — এই সব মিলিয়ে এটি একটি চমৎকার বিকল্প। বিশেষ করে পর্যটকদের জন্য এটি একটি রোমাঞ্চকর, স্বস্তিদায়ক এবং স্মরণীয় যাত্রা। TEK NEWS-এর পাঠকদের জন্য এ তথ্যগুলো আশা করি সহায়ক হবে। আপনি চাইলে ট্রেন ভাড়া, বুকিং গাইড বা অন্যান্য রুট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন — জানালেই আমার সহায়তা করতে প্রস্তুত।