কক্সবাজার বিচের নাম – সম্পূর্ণ গাইড

tek news icon bd

TEK NEWS DESK

September 23, 2020

বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বালুকাবেলাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য বিচ বা সৈকত, যেগুলোর প্রত্যেকটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, সৌন্দর্য এবং আকর্ষণ রয়েছে। যারা কক্সবাজার ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই ব্লগে আমরা তুলে ধরবো কক্সবাজার বিচের নাম ও বিবরণ একসাথে।

১. লাবণী পয়েন্ট (Laboni Beach)

  • অবস্থান: কক্সবাজার শহরের মূল সৈকতের উত্তর প্রান্ত
  • বিশেষত্ব: সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজে প্রবেশযোগ্য বিচ।
  • করণীয়: সাগর দর্শন, সূর্যাস্ত দেখা, ফটোগ্রাফি, বিচ মার্কেট ভ্রমণ।
  • নোট: এটি স্থানীয় ও দূরদূরান্তের পর্যটকদের মিলনস্থল।

২. সুগন্ধা বিচ (Sugandha Beach)

  • অবস্থান: লাবণী পয়েন্টের দক্ষিণে
  • বিশেষত্ব: সি-ফুড রেস্টুরেন্ট, বার্মিজ মার্কেট, বিচ ফুড কর্নার।
  • করণীয়: সি-ফুড টেস্টিং, শপিং, ঘোড়ায় চড়া।

৩. কলাতলী বিচ (Kolatoli Beach)

  • অবস্থান: সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণে
  • বিশেষত্ব: হোটেল ও রিসোর্ট এলাকা, বিচ রাইড, ওয়াটার স্পোর্টস।
  • করণীয়: জেট-স্কি, বিচ বাইক, সানবাথ।

৪. হিমছড়ি বিচ (Himchari Beach)

  • অবস্থান: কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১২ কিমি দক্ষিণে
  • বিশেষত্ব: ঝরনা, পাহাড়, সাগরের মিলিত দৃশ্য।
  • করণীয়: ট্রেকিং, ফটোগ্রাফি, পিকনিক।

৫. ইনানী বিচ (Inani Beach)

  • অবস্থান: কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৩২ কিমি দক্ষিণে
  • বিশেষত্ব: প্রবাল পাথর, স্বচ্ছ জল, শান্ত পরিবেশ।
  • করণীয়: সাঁতার, সানসেট ফটোগ্রাফি, প্রাইভেট ভ্রমণ।

৬. পাটুয়ারটেক বিচ (Patua Tek Beach)

  • অবস্থান: ইনানীর কাছে
  • বিশেষত্ব: তুলনামূলক কম ভিড়, নীরব পরিবেশ।
  • করণীয়: হাঁটাহাঁটি, প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ।

৭. দরিয়ানগা বিচ (Darianagar Beach)

  • অবস্থান: হিমছড়ি থেকে কিছুটা দক্ষিণে
  • বিশেষত্ব: পাহাড় ও সমুদ্রের মিলন, পাখির অভয়ারণ্য।
  • করণীয়: বার্ড ওয়াচিং, ফটোগ্রাফি।

৮. রাঙামাটি সৈকত (Rangamati Beach)

  • অবস্থান: হিমছড়ি–ইনানী রোডের কাছাকাছি
  • বিশেষত্ব: স্থানীয় গ্রামীণ জীবন ও সমুদ্র একসাথে দেখা যায়।

৯. কক্সবাজার ফিশারি ঘাট (Fishery Ghat Beach)

  • অবস্থান: শহরের উত্তর দিকে
  • বিশেষত্ব: মাছ ধরার ট্রলার, নৌকা, মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রা।

১০. কুতুবদিয়া দ্বীপের সৈকত

  • অবস্থান: মহেশখালীর কাছাকাছি
  • বিশেষত্ব: শান্ত ও নির্জন সমুদ্র, বাতিঘর দর্শন।

১১. মহেশখালী দ্বীপের সৈকত

  • বিশেষত্ব: পাহাড়ি দ্বীপ, মন্দির, লবণ চাষ ও সমুদ্রের মিলন।

১২. সোনাদিয়া দ্বীপের বিচ

  • বিশেষত্ব: সামুদ্রিক কচ্ছপের আবাসস্থল, প্রবাল, নির্জনতা।

১৩. দরিয়ানগা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দক্ষিণ উপকূল

  • বিশেষত্ব: অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাগর ও পাহাড় একসাথে।

ভ্রমণ টিপস

  • সৈকতে ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা মেনে চলুন
  • সূর্যাস্তের সময় ক্যামেরা হাতে রাখুন
  • শপিংয়ের সময় দরদাম করুন
  • বৃষ্টির মৌসুমে সমুদ্রস্নানে সতর্ক থাকুন

FAQ – কক্সবাজার বিচ সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১: কক্সবাজারে কতগুলো বিচ আছে?
উত্তর: মূল শহর ও আশেপাশে ১০টির বেশি প্রধান বিচ রয়েছে, তবে পুরো উপকূলে ২০টিরও বেশি বিচ আছে।

প্রশ্ন ২: কোন বিচে পর্যটক ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়?
উত্তর: লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা ও কলাতলী বিচে ভিড় বেশি হয়।

প্রশ্ন ৩: শান্ত পরিবেশ কোথায় পাওয়া যাবে?
উত্তর: ইনানী, পাটুয়ারটেক ও সোনাদিয়া দ্বীপে তুলনামূলক শান্ত পরিবেশ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ৪: কোন বিচে সি-ফুড সবচেয়ে ভালো?
উত্তর: সুগন্ধা বিচ ও কলাতলী এলাকায় সি-ফুড রেস্টুরেন্ট বেশি জনপ্রিয়।

শেষ কথা

কক্সবাজারের প্রতিটি বিচের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য। শহরের ব্যস্ততা থেকে শুরু করে নির্জন দ্বীপের শান্ত পরিবেশ—সবই পাওয়া যায় এখানে। তাই কক্সবাজার ভ্রমণের সময় শুধুমাত্র এক-দুইটি বিচে সীমাবদ্ধ না থেকে যত বেশি সম্ভব বিচ ঘুরে দেখার চেষ্টা করুন, তবেই এই বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

Leave a Comment