আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ ও তালিকা

tek news icon bd

TEK NEWS DESK

January 6, 2020

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা ও পালনকর্তা। ইসলামের ধর্মমতে, আল্লাহর নামগুলো মহান, পবিত্র এবং অসীম শক্তির প্রতীক। আল্লাহর ৯৯টি সুন্দর নাম বা আস্মা-উল-হুসনা বিশ্বাসীদের জন্য একটি উৎসাহ এবং পথপ্রদর্শক, যা আল্লাহর বিভিন্ন গুণাবলীর মাধ্যমে তাঁর সত্তা ও গুণ সম্পর্কে উপলব্ধি করার সুযোগ দেয়। এসব নামের মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ দয়া, ক্ষমাশীলতা, শক্তি ও জ্ঞান সম্পর্কে জানা যায়। আল্লাহর নামগুলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে এবং তাঁর নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে।

আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ব্যাখ্যা:

১. আর-রহমান (অতিশয় দয়ালু)
আল্লাহ দয়া ও অনুগ্রহে অতুলনীয়। তিনি সমস্ত সৃষ্টিকে দয়া করেন, তাদের প্রয়োজন মেটান।

২. আর-রহীম (চিরন্তন দয়ালু)
তিনি নিরন্তর দয়া করেন, বিশেষ করে তাঁর অনুগত বান্দাদের প্রতি। তাঁর দয়া সীমাহীন।

৩. আল-মালিক (রাজাধিরাজ)
আল্লাহ সমগ্র জগতের অধিপতি ও মালিক। সমস্ত কিছু তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন।

৪. আল-কুদ্দুস (পরম পবিত্র)
তিনি সমস্ত অপূর্ণতা থেকে মুক্ত। আল্লাহ নিখুঁত এবং কোনো অশুদ্ধতা তাঁর মধ্যে নেই।

৫. আস-সালাম (শান্তি প্রদানকারী)
আল্লাহ শান্তির উৎস, যিনি শান্তি প্রদান করেন এবং তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য শান্তি নির্ধারণ করেন।

৬. আল-মুমিন (নিরাপত্তা দানকারী)
তিনি বিশ্বাসীদের নিরাপত্তা প্রদান করেন এবং তাদের ভয় দূর করেন।

৭. আল-মুহাইমিন (পরম অভিভাবক)
আল্লাহ সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করেন ও রক্ষা করেন।

৮. আল-আজীজ (পরম শক্তিশালী)
আল্লাহ মহান ও শক্তিশালী, তাঁর সামনে কেউ মাথা উঁচু করতে পারে না।

৯. আল-জব্বার (শক্তিধর)
আল্লাহ সবকিছুর উপরে অধিকারী, তিনি যা চান তা করতে পারেন।

১০. আল-মুতাকাব্বির (পরম শ্রেষ্ঠত্বশালী)
তিনি মহত্তম ও শ্রেষ্ঠ, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই।

১১. আল-খালিক (স্রষ্টা)
আল্লাহ সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং সবকিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা তাঁর আছে।

১২. আল-বারি’ (পরিকল্পনাকারী)
আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন।

১৩. আল-মুসাওয়ার (রূপদানকারী)
তিনি সমস্ত সৃষ্টিকে বিশেষ রূপে সাজিয়েছেন এবং তাদের আকৃতি দিয়েছেন।

১৪. আল-গাফ্ফার (অতিশয় ক্ষমাশীল)
আল্লাহ বান্দাদের পাপ ক্ষমা করেন এবং তাদের প্রতি দয়া করেন।

১৫. আল-কাহহার (পরম পরাজিতকারী)
তিনি সমস্ত কিছুকে পরাজিত করতে সক্ষম, কোনো কিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়।

১৬. আল-ওয়াহহাব (দানশীল)
আল্লাহ দানশীল, যিনি কোনো বিনিময় ছাড়াই তাঁর সৃষ্টিকে নেয়ামত দান করেন।

১৭. আর-রজ্জাক (রিজিকদাতা)
তিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতকে রিজিক (জীবিকার উপাদান) প্রদান করেন।

১৮. আল-ফাত্তাহ (উন্মোচনকারী)
আল্লাহ সমস্ত সমস্যার সমাধান উন্মোচনকারী এবং কপাল খুলে দেন।

১৯. আল-আলীম (সর্বজ্ঞ)
আল্লাহ সমস্ত কিছু জানেন—অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ।

২০. আল-কাবিদ (জীবিকা সংকোচনকারী)
তিনি যাদের ইচ্ছা তাদের জীবিকা কমিয়ে দেন এবং সংকীর্ণতা প্রদান করেন।

২১. আল-বাসিত (জীবিকা প্রশস্তকারী)
আল্লাহ যাদের ইচ্ছা তাদের জীবিকা প্রসারিত করেন।

২২. আল-খাফিদ (পতন ঘটানোকারী)
আল্লাহ যার ইচ্ছা তাকে নিচে নামিয়ে দেন বা অপমানিত করেন।

২৩. আর-রাফি’ (উচ্চতরকারী)
তিনি যার ইচ্ছা তাকে সম্মানিত করেন এবং মর্যাদা বাড়ান।

২৪. আল-মু’ঈয (মর্যাদা প্রদানকারী)
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে মর্যাদা ও সম্মান প্রদান করেন।

২৫. আল-মুফসিত (অপদস্তকারী)
তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে অপমান করেন ও ক্ষমতাচ্যুত করেন।

২৬. আল-হাকাম (পরম বিচারক)
আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক, যিনি সকল সিদ্ধান্ত নেন এবং সুবিচার করেন। তাঁর ফয়সালা চূড়ান্ত এবং ন্যায়সঙ্গত।

২৭. আল-আদল (ন্যায়পরায়ণ)
তিনি সমগ্র জগতের প্রতি ন্যায়বিচার করেন এবং কারো প্রতি অন্যায় করেন না। তাঁর বিচার সর্বদা ন্যায়নিষ্ঠ।

২৮. আল-লতীফ (অতি কোমল ও দয়ালু)
আল্লাহ অত্যন্ত মমত্বপূর্ণ এবং সৃষ্টির প্রতি খুবই কোমলভাবে আচরণ করেন। তিনি এমনভাবে সাহায্য করেন যা মানুষ বুঝতে পারে না।

২৯. আল-খবীর (সর্বজ্ঞাত)
তিনি সবকিছু সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল ব্যাপারে সচেতন।

৩০. আল-হালীম (অত্যন্ত ধৈর্যশীল)
আল্লাহ সবধরনের ত্রুটি এবং পাপকে ধৈর্যের সাথে সহ্য করেন এবং শাস্তি প্রদানে ধীরস্থির থাকেন।

৩১. আল-আজীম (মহান ও মহানুভব)
তিনি মহত্ত্বের অধিকারী, সকল জিনিসের উপরে এবং তাঁর মহিমা অসীম।

৩২. আল-গাফূর (পরম ক্ষমাশীল)
আল্লাহ সৃষ্টির সকল পাপ ক্ষমা করেন যদি তারা তাঁর কাছে ফিরে আসে এবং তওবা করে।

৩৩. আশ-শাকুর (গুণগ্রাহী)
তিনি সৃষ্টির ভালো কাজগুলোর পুরস্কার দেন এবং সামান্যতম ভালো কাজকেও মহৎ পুরস্কারে পরিণত করেন।

৩৪. আল-আলী (সর্বোচ্চ)
আল্লাহ উচ্চতম, তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী এবং তাঁর উপরে কেউ নেই।

৩৫. আল-কবীর (মহান ও বিশাল)
তিনি অমিত শক্তি ও ক্ষমতাশালী, তাঁর সৃষ্টি ও কর্মকাণ্ড মহান ও বিস্তৃত।

৩৬. আল-হাফীজ (রক্ষাকারী)
আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টিকে রক্ষা করেন এবং তাদের কল্যাণ সাধনে নিরন্তর কাজ করেন।

৩৭. আল-মুকীত (সৃষ্টির রিজিকের যোগানদাতা)
তিনি সমস্ত জীবকে প্রয়োজনীয় জীবিকা দান করেন এবং তাদের জীবিকার সরবরাহ বজায় রাখেন।

৩৮. আল-হাসীব (হিসাব গ্রহণকারী)
আল্লাহ প্রতিটি কাজের হিসাব নেন এবং তাঁর বিচার সর্বদা নির্ভুল।

৩৯. আল-জালিল (মহান গৌরবময়)
তিনি মহান এবং মহিমাময়, তাঁর গৌরব ও সম্মান অপরিসীম।

৪০. আল-করীম (সুবদানশীল)
আল্লাহ অত্যন্ত দানশীল এবং বদান্য, তিনি সবকিছু উদারভাবে দান করেন।

৪১. আর-রাকীব (পর্যবেক্ষণকারী)
আল্লাহ সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেন, তাঁর নজর থেকে কিছুই গোপন নয়।

৪২. আল-মুজীব (প্রার্থনার জবাব দানকারী)
তিনি সব দোয়া শুনেন এবং সঠিক সময়ে উত্তর প্রদান করেন।

৪৩. আল-ওয়াসি’ (সর্বব্যাপী)
আল্লাহর জ্ঞান ও করুণা সমগ্র সৃষ্টিকে পরিবেষ্টন করে।

৪৪. আল-হাকীম (প্রজ্ঞাময়)
আল্লাহ সকল কাজে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময় এবং সব সিদ্ধান্ত ও কর্ম সুপরিকল্পিত।

৪৫. আল-ওয়াদূদ (পরম প্রেমময়)
আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল ও প্রেমময়।

৪৬. আল-মাজীদ (মহান মহিমাময়)
তিনি মহিমায় ভরপুর এবং তাঁর মহত্ত্ব চিরন্তন।

৪৭. আল-বা’ইস (পুনরুত্থানকারী)
আল্লাহ মৃতদের পুনরুজ্জীবিত করবেন এবং তাদের পুনর্জন্ম দেবেন।

৪৮. আশ-শাহীদ (সাক্ষ্যদাতা)
তিনি সবকিছুর সাক্ষ্য দেন, এবং সব ঘটনা ও কাজ সম্পর্কে সচেতন।

৪৯. আল-হক (পরম সত্য)
আল্লাহই একমাত্র সত্য, তাঁর অস্তিত্ব ও কর্ম সর্বদা সত্যের সাথে সম্পৃক্ত।

৫০. আল-ওকীল (অভিভাবক ও রক্ষাকর্তা)
তিনি সমগ্র সৃষ্টির অভিভাবক এবং তাঁর ওপর যারা নির্ভর করে তাদের সবকিছু রক্ষা করেন।

৫১. আল-ক্ববী (অত্যন্ত শক্তিশালী)
আল্লাহ মহাশক্তিশালী, তাঁর ক্ষমতা ও শক্তি অপরিসীম।

৫২. আল-মাতীন (দৃঢ় ও শক্ত)
আল্লাহ অত্যন্ত দৃঢ় এবং কোনো কিছুই তাঁকে দুর্বল করতে পারে না।

৫৩. আল-ওয়ালীয় (বন্ধু ও অভিভাবক)
তিনি বিশ্বাসীদের পরম বন্ধু এবং সাহায্যকারী।

৫৪. আল-হামীদ (সকল প্রশংসার অধিকারী)
আল্লাহই প্রশংসার উপযুক্ত, তিনি সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা পান।

৫৫. আল-মুহসী (হিসাব গ্রহণকারী)
তিনি সকল কিছু গণনা করেন এবং প্রতিটি কাজের হিসাব রাখেন।

৫৬. আল-মুবদী’ (প্রথম সৃষ্টিকর্তা)
তিনি প্রথমবার সৃষ্টির সূচনা করেছেন এবং সমস্ত কিছু তাঁর সৃষ্টির ফসল।

৫৭. আল-মু’ঈদ (পুনরায় সৃষ্টিকারী)
তিনি পুনর্জন্মের ক্ষমতা রাখেন, অর্থাৎ তিনি জীবিতদের পুনরায় সৃষ্টি করবেন।

৫৮. আল-মুহই (জীবনদানকারী)
আল্লাহ জীবন দেন এবং সবকিছুকে জীবিত করেন।

৫৯. আল-মুমীত (মৃত্যুদাতা)
তিনি জীবনের শেষ করেন এবং মৃত্যুর মাধ্যমে সৃষ্টির শেষ করেন।

৬০. আল-হাই (চিরঞ্জীব)
আল্লাহ চিরজীবিত, তাঁর কোন মৃত্যু নেই।

৬১. আল-ক্বাইয়ূম (সমস্ত কিছুর ধারক)
আল্লাহ নিজেই তাঁর অস্তিত্বে অটল এবং সমস্ত সৃষ্টিকে তাঁর ওপর নির্ভরশীল করে রেখেছেন।

৬২. আল-ওয়াজিদ (প্রচুরতা দানকারী)
আল্লাহ যার প্রয়োজন তাকেই প্রয়োজনীয় সবকিছু দান করেন এবং প্রচুর রিজিক দেন।

৬৩. আল-মাজিদ (মহিমাময়)
আল্লাহর মহিমা ও গৌরব অপরিসীম, তিনি সম্মানের অধিকারী।

৬৪. আল-ওয়াহিদ (অদ্বিতীয়)
আল্লাহ একক এবং তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তিনি অদ্বিতীয়।

৬৫. আল-আহাদ (একক)
আল্লাহ একক, তিনি শাশ্বত ও অনন্য।

৬৬. আস-ছামাদ (অবলম্বন)
আল্লাহ চিরস্থায়ী এবং সমস্ত সৃষ্টিই তাঁর ওপর নির্ভরশীল।

৬৭. আল-কাদির (পরম ক্ষমতাবান)
আল্লাহ সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান এবং তিনি যা চান তা করতেই পারেন।

৬৮. আল-মুক্বতাদির (পরম প্রভুত্বশালী)
তিনি সৃষ্টিকে পরিচালনা করেন এবং তার নিয়ন্ত্রণে সবকিছু রাখেন।

৬৯. আল-মুক্বাদ্দিম (অগ্রবর্তী)
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মুখে আনেন এবং অগ্রসর করেন।

৭০. আল-মু’আখির (পশ্চাতে রাখেন)
তিনি যাকে ইচ্ছা পিছিয়ে রাখেন বা তার কাজ পিছনে ফেলেন।

৭১. আল-আউয়াল (প্রথম)
আল্লাহ সৃষ্টির পূর্বেও বিদ্যমান ছিলেন, তিনিই প্রথম।

৭২. আল-আখির (শেষ)
আল্লাহ চিরস্থায়ী, সৃষ্টির সবশেষেও তিনিই থাকবেন।

৭৩. আয-যাহির (প্রকাশিত)
আল্লাহর উপস্থিতি সর্বদা বিদ্যমান এবং তিনি সর্বদা দৃশ্যমান।

৭৪. আল-বা’তিন (অদৃশ্য)
আল্লাহর সত্তা লুকায়িত এবং গোপন, তিনি সবকিছু জানেন তবে নিজে অদৃশ্য।

৭৫. আল-ওয়ালী (পরম অভিভাবক)
আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির অভিভাবক এবং শাসক। তিনি সৃষ্টিকে পরিচালনা করেন এবং তাদের কল্যাণের ব্যবস্থা করেন।

৭৬. আল-মুতাআলী (অত্যন্ত মহান)
আল্লাহ অত্যন্ত মহিমান্বিত ও উচ্চ। তিনি সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।

৭৭. আল-বার (কল্যাণকারী)
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অশেষ কল্যাণকারী। তিনি তাদের জন্য মঙ্গল করেন এবং তাদের ভালো কাজের প্রতিদান দেন।

৭৮. আত-তাওয়াব (অনেকবার তওবা গ্রহণকারী)
আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তিনি বারবার তওবা গ্রহণ করেন এবং পাপীদের ক্ষমা করেন।

৭৯. আল-মুনতাকিম (প্রতিশোধ গ্রহণকারী)
যারা সীমালঙ্ঘন করে তাদের আল্লাহ শাস্তি দেন। তিনি অন্যায়কারীদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন।

৮০. আল-আফূ (ক্ষমাশীল)
আল্লাহ ক্ষমাশীল, তিনি পাপীদের পাপসমূহ সম্পূর্ণভাবে মাফ করে দেন এবং তাদের শাস্তি থেকে মুক্তি দেন।

৮১. আর-রউফ (অত্যন্ত স্নেহশীল)
আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল ও মমতাশীল। তিনি তাঁদের প্রতি সদয় আচরণ করেন।

৮২. মালিক-উল-মুলক (সমগ্র রাজ্যের অধিপতি)
আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টি জগতের মালিক এবং রাজ্যের অধিপতি। সবকিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণে এবং তাঁর সম্পত্তি।

৮৩. যুল-জালাল ওয়াল-ইকরাম (মহিমা ও সম্মানের অধিকারী)
আল্লাহ মহিমা ও সম্মানের অধিকারী। তিনি গৌরব ও মর্যাদায় সর্বশ্রেষ্ঠ।

৮৪. আল-মুকসিত (ন্যায়বিচারকারী)
আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির প্রতি ন্যায়বিচার করেন। তিনি কারও প্রতি কোনো অবিচার করেন না।

৮৫. আল-জামি’ (সমাবেশকারী)
আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টিকে একত্রিত করেন। কিয়ামতের দিন তিনি সব মানুষকে একত্র করবেন।

৮৬. আল-গনী (অভাবমুক্ত)
আল্লাহ নিজে অভাবমুক্ত। তাঁর কোন কিছু প্রয়োজন নেই, বরং সমস্ত সৃষ্টি তাঁর ওপর নির্ভরশীল।

৮৭. আল-মুগনী (অভাবমুক্তকারী)
আল্লাহ মানুষকে সম্পদশালী ও অভাবমুক্ত করেন। তিনি তাদের জীবিকা প্রদান করেন।

৮৮. আল-মানি’ (প্রতিরোধকারী)
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার থেকে ক্ষতি বা দুঃখ প্রতিরোধ করেন। তিনি ক্ষতিকর বিষয় থেকে বান্দাদের রক্ষা করেন।

৮৯. আদ-দার (ক্ষতিকর বিষয় সৃষ্টিকারী)
আল্লাহ মানুষের পরীক্ষা ও সাবধানতার জন্য ক্ষতিকর কিছু তৈরি করেন, যা বান্দাদের শিক্ষা দেয়।

৯০. আন-নাফি’ (উপকার প্রদানকারী)
আল্লাহ কল্যাণকারী। তিনি তাঁর সৃষ্টির জন্য উপকার সাধন করেন এবং কল্যাণ প্রদান করেন।

৯১. আন-নূর (আলো)
আল্লাহ পরম আলোকস্বরূপ। তিনি সমস্ত জগতে আলো দেন এবং তাঁর আলোতেই সত্যের পথ দেখা যায়।

৯২. আল-হাদী (পথপ্রদর্শক)
আল্লাহ সকল সৃষ্টিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। তিনি সত্য ও কল্যাণের দিকে পথ দেখান।

৯৩. আল-বাদী’ (অভিনব সৃষ্টিকর্তা)
আল্লাহ কোনো পূর্বের উদাহরণ ছাড়াই নতুন কিছু সৃষ্টি করেন। তিনি সৃষ্টিতে নতুনত্ব আনেন।

৯৪. আল-বাকী (চিরস্থায়ী)
আল্লাহ চিরস্থায়ী, তাঁর কোন শেষ নেই। তিনি সৃষ্টির পূর্বেও ছিলেন এবং সৃষ্টির পরেও থাকবেন।

৯৫. আল-ওয়ারিস (উত্তরাধিকারী)
আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির শেষের পরও টিকে থাকবেন এবং সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী হবেন।

৯৬. আর-রশীদ (সঠিক পথপ্রদর্শক)
আল্লাহ সৃষ্টির সকলকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। তাঁর নির্দেশনা সঠিক ও সুশৃঙ্খল।

৯৭. আস-সাবুর (অত্যন্ত ধৈর্যশীল)
আল্লাহ ধৈর্যের প্রতীক। তিনি বান্দাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধৈর্যের সাথে সহ্য করেন এবং তাদের সংশোধনের সুযোগ দেন।

৯৮. আল-মুজিব (দোয়া গ্রহণকারী)
আল্লাহ বান্দাদের দোয়া গ্রহণ করেন এবং তাদের প্রার্থনার জবাব দেন।

৯৯. আল-হাসীব (পর্যাপ্ত হিসাব গ্রহণকারী)
আল্লাহ প্রতিটি কাজের নিখুঁত হিসাব গ্রহণ করেন এবং সঠিক বিচার করেন।

আল্লাহর ৯৯টি নাম তাঁর অসীম ক্ষমতা, করুণা, ন্যায়বিচার এবং দয়াকে প্রকাশ করে। প্রতিটি নাম আল্লাহর কোনো না কোনো বিশেষ গুণের প্রতিফলন। আল্লাহর এই নামগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর প্রতি বিশ্বাস, ভালোবাসা ও নির্ভরশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কুরআনে কি আল্লাহর ৯৯ টি নাম আছে?

কুরআনে সরাসরি আল্লাহর ৯৯টি নাম একত্রে উল্লেখ করা হয়নি, তবে কুরআনে বিভিন্ন স্থানে আল্লাহর নাম ও গুণবাচক বিশেষণ উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহর গুণগুলো কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে ছড়িয়ে রয়েছে। যেমন, আল্লাহর গুণাবলী হিসেবে “আর-রহমান” (পরম করুণাময়), “আর-রহীম” (অত্যন্ত দয়ালু), “আল-হাকিম” (সর্বজ্ঞানী), “আল-আলীম” (সর্বজ্ঞ), ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে।

আল্লাহর ৯৯টি নামের ধারণাটি মূলত সহিহ হাদিস থেকে এসেছে। যেমন, হাদিসে এসেছে:

“আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে—একশোর একটি কম—যে ব্যক্তি এই নামগুলো মুখস্থ করবে এবং তাদের অর্থ বুঝে অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (বুখারি ও মুসলিম)

এতে বোঝা যায় যে আল্লাহর নাম ও গুণাবলী হাদিস দ্বারা নির্ধারিত, এবং কুরআনে বিভিন্ন স্থানে এগুলোর উল্লেখ রয়েছে, তবে একত্রে নির্দিষ্টভাবে ৯৯টি নাম কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি।

আল্লাহর সকল নামকে কি বলা হয়?

আল্লাহর সকল নামকে আসমাউল হুসনা (اَسْمَاءُ ٱللَّٰهِ ٱلْحُسْنَىٰ) বলা হয়, যার অর্থ “সর্বোত্তম বা সুন্দরতম নামসমূহ।” এটি আল্লাহর গুণবাচক বিশেষণগুলোকে নির্দেশ করে, যা তাঁর অসীম ক্ষমতা, করুণা, জ্ঞান ও সত্তার বিভিন্ন দিক প্রকাশ করে। কুরআনে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে:

“আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। তোমরা তাঁকে সে নামসমূহ দ্বারা ডাকো…” (সূরা আল-আ’রাফ, ৭:১৮০)

আসমাউল হুসনা আল্লাহর বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে তাঁকে জানার একটি উপায়।

কুরআনে আল্লাহর কয়টি নাম উল্লেখ আছে?

কুরআনে আল্লাহর বিভিন্ন নাম ও গুণবাচক বিশেষণ উল্লেখ রয়েছে, তবে নির্দিষ্টভাবে ৯৯টি নাম একত্রে উল্লেখ নেই। বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহর বহু গুণবাচক নাম পাওয়া যায়, যেমন “আর-রহমান” (পরম করুণাময়), “আর-রহীম” (অত্যন্ত দয়ালু), “আল-হাকিম” (সর্বজ্ঞানী), “আল-আলীম” (সর্বজ্ঞ), ইত্যাদি।

তবে সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে, যা মুখস্থ করলে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কুরআনে এসব নাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন সূরায় উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে নির্দিষ্টভাবে ৯৯টি বলা হয়নি।

কুরআনে আল্লাহর কোন নাম সর্বাধিক এসেছে?

কুরআনে আল্লাহর যে নামটি সর্বাধিকবার এসেছে, তা হলো “আল্লাহ” (الله)। এই নামটি প্রায় ২,৭০০ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আল্লাহর নিজস্ব নাম, যা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে নির্দেশ করে। আল্লাহ শব্দটি আরবি ভাষায় এসেছে এবং একচেটিয়াভাবে সেই সত্ত্বাকে বোঝায়, যিনি এক, অদ্বিতীয়, এবং সব কিছুর স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক।

ব্যাখ্যা:

  • আল্লাহ নামটি আল্লাহর সর্বজনীন পরিচয় বহন করে। এটি কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলির সার্বিকতা প্রকাশ করে। কুরআনের প্রথম সূরা সূরা আল-ফাতিহা থেকে শুরু করে শেষ সূরা সূরা আন-নাস পর্যন্ত “আল্লাহ” নামটি বিভিন্ন প্রসঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে।
  • আল্লাহ নামটি আল্লাহর একত্ব ও অদ্বিতীয়তাকে তুলে ধরে, যা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের ভিত্তি। এটি তাওহীদের মূলমন্ত্রের অংশ: “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই)। এটি মুসলিমদের বিশ্বাস ও জীবনযাপনের মূল শিক্ষা।
  • কুরআনে আল্লাহ নামের পাশাপাশি তাঁর অন্যান্য গুণাবলী যেমন আর-রহমান (পরম করুণাময়) ও আর-রহীম (অত্যন্ত দয়ালু) প্রায়ই “আল্লাহ” নামের সাথে ব্যবহার করা হয়েছে, যেমনটি দেখা যায় সূরা আল-ফাতিহায়:“বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” (আরম্ভ করছি আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতিশয় দয়ালু)।

“আল্লাহ” নামটি আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, শাসন, দয়া, ক্ষমা, এবং সৃষ্টির প্রতি তাঁর অসীম ভালোবাসা ও নিয়ন্ত্রণের প্রতীক। এই নামটি প্রতিটি মুসলিমের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিদিনের প্রার্থনা ও ধর্মীয় কাজে আল্লাহর কাছে আহ্বানের মূল মাধ্যম।

আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত কি?

আল্লাহর ৯৯টি নামের (আসমাউল হুসনা) বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব রয়েছে, যা ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস ও অনুশীলন। আল্লাহর এই নামগুলো মানুষকে আল্লাহর সত্তা, গুণাবলী, ক্ষমতা ও দয়ার উপলব্ধি করাতে সাহায্য করে। ৯৯টি নামের ফজিলত বোঝাতে নিম্নোক্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা যায়:

১. জান্নাতের প্রতিশ্রুতি:

হাদিসে এসেছে যে আল্লাহর ৯৯টি নাম মুখস্থ করা এবং বুঝে আমল করা জান্নাতের পথ সুগম করে। মহানবী (সাঃ) বলেছেন:

“আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে, একশোর একটি কম; যে এগুলো মুখস্থ করবে (বা এর ওপর আমল করবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”— (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে আল্লাহর নামগুলো শুধু মুখস্থ করাই যথেষ্ট নয়, বরং এর সাথে বুঝে তাঁর গুণাবলির প্রতি বিশ্বাস রাখা এবং সেসব গুণাবলির ওপর জীবনযাপন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলির উপলব্ধি:

আল্লাহর ৯৯টি নাম তাঁর সত্তার বিভিন্ন দিককে প্রকাশ করে। যেমন, আল-ওয়াহিদ (অদ্বিতীয়), আল-আলীম (সর্বজ্ঞানী), আল-গফুর (পরম ক্ষমাশীল)। এই নামগুলো মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও ভয় সৃষ্টি করে। আল্লাহর নামগুলোকে গভীরভাবে উপলব্ধি করা এবং তার সাথে সংযুক্ত হওয়া আমাদের আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে।

৩. মানুষের দোয়া কবুল হওয়া:

আল্লাহর ৯৯টি নাম দ্বারা আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দোয়া কবুল হওয়ার একটি মাধ্যম। কুরআনে বলা হয়েছে:

“আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ; তোমরা তাঁকে সেই নামসমূহ দ্বারা ডাকো।”— (সূরা আল-আ’রাফ, ৭:১৮০)

আল্লাহর সুন্দর নামগুলো ব্যবহার করে দোয়া করলে তা অধিকতর প্রভাবিত হতে পারে, কারণ এতে আল্লাহর গুণাবলির প্রতি আমাদের বিশ্বাস ও ভরসা প্রতিফলিত হয়।

৪. আখলাক উন্নত করার উপায়:

আল্লাহর নামগুলো মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে। যেমন, আল্লাহ আস-সাবুর (ধৈর্যশীল), তাই আমাদেরও ধৈর্যশীল হতে উৎসাহিত করা হয়। আল্লাহ আর-রহীম (দয়ালু), তাই আমাদেরও দয়ালু হতে শেখানো হয়। আল্লাহর গুণাবলির অনুকরণ আমাদের আখলাক ও চরিত্র উন্নত করে।

৫. আল্লাহর প্রতি অগাধ আস্থা ও নির্ভরশীলতা:

আল্লাহর নামগুলো আমাদের শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ আমাদের সকল অবস্থার নিয়ন্ত্রক এবং তিনি সকল সমস্যার সমাধানকারী। উদাহরণস্বরূপ, আল-রাযিক (রিজিকদাতা), আল-মালিক (মহান রাজা) ইত্যাদি নামগুলো আমাদের আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা ও নির্ভরশীলতা সৃষ্টি করে।

৬. আধ্যাত্মিক সান্ত্বনা ও মানসিক শান্তি:

আল্লাহর নামগুলো স্মরণ করলে অন্তরে শান্তি ও আধ্যাত্মিক সান্ত্বনা আসে। যখন আমরা আল্লাহর নামগুলি ভাবি এবং সেগুলোর দ্বারা আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও দয়া সম্পর্কে চিন্তা করি, তখন আমাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়। আল্লাহর নামের ফজিলত শুধু এই দুনিয়ায় নয়, আখিরাতের কল্যাণও বয়ে আনে।

আল্লাহর ৯৯টি নামের ফজিলত অসীম এবং তা একজন মুমিনের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো মুখস্থ করা, বুঝা, এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা একজন মুসলমানকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ সুগম করে। এই নামগুলো আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, ভয়, এবং নির্ভরশীলতার শিক্ষা দেয়, যা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর।

উপসংহার:

আল্লাহর ৯৯টি নাম আমাদের সামনে তাঁর গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে, যা আল্লাহকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে জানার এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাসকে দৃঢ় করার একটি অনন্য সুযোগ। আল্লাহর নামগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সঠিক পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করে। নামগুলোতে আল্লাহর অসীম ক্ষমতা, দয়া, এবং জ্ঞান সম্পর্কে বোঝা যায়। এ নামগুলো একদিকে যেমন আমাদের মনে আধ্যাত্মিকতা ও ভালোবাসার উন্মেষ ঘটায়, তেমনি অন্যদিকে আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভক্তি সৃষ্টি করে।

ধন্যবাদ টেক নিউজের সাথে থাকার জন্য। আমাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন।

Leave a Comment